সূরা ইখলাস; বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ব্যাখ্যা
পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কোরআনের ১১২ নম্বর সূরা 'ইখলাস''। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ৪টি এবং রূকুর সংখ্যা ১টি।সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে মক্কায়।
সূরা ইখলাস, কুল হুয়াল্লাহু আহাদ |
সূরা ইখলাস আরবি
Surah Ikhlas Arabic:
بسم الله الرحمن الرحيم
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ١
اللَّهُ الصَّمَدُ ٢
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ٣
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ٤
সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুচ্চামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।
সূরা ইখলাসের বাংলা অর্থ
(হে রাসুল!) বলুন, তিনিই আল্লাহ, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই।'
সূরা ইখলাসের ব্যাখ্যা
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রাঃ) বর্ণনা করেন, কুরাইশরা রাসূলুল্লাহকে(সাঃ) বলেন, আপনার রবের বংশ পরিচয় আমাদের জানান। এরপর এ সূরাটি নাযিল হয়।
হযরত ইমাম সাদিক্ব (আঃ) বলেছেন: ইহুদিরা মহান আল্লাহর পরিচিতি সম্পর্কে রাসুলের(সাঃ) কাছে জানতে চেয়েছিল। কিন্তু রাসুল তাদেরকে কোনো জবাব না দিয়ে তিন দিন নীরব থাকেন। এ অবস্থায় ইহুদিদের প্রশ্নের জবাব হিসেবে এ সুরা নাজিল হয়।
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ(রাঃ) বর্ণনা করেন, এক গ্রামীণ আরব নবীকে(সাঃ) বলেন, আপনার রবের বংশধারা আমাদের জানান। এর জবাবে আল্লাহ এ সূরাটি নাযিল করেন।
এ সূরার মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জানিয়ে দেন, তিনি সন্তান সন্ততি, বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন বা অন্য কোন কিছুর মুখাপেক্ষি নন। তাঁর সমতুল্য বা সমকক্ষ ও কোন অংশীদার নেই। তিনি সব কিছু থেকে থেকে পবিত্র। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ, শ্রেষ্ঠ সব বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং তিনি সব কিছুতেই পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ। এ কথাগুলোই সূরা ইখলাসে তুলে তা ধরা হয়েছে।
খ্রিস্টানরা হযরত ঈসাকে এবং ইহুদীরা উজাইরকে আল্লাহর পুত্র বলে দাবী করে। ত্রিত্ববাদী খ্রিস্টানরা মনে করে খোদা তিন জন। তারা হল: পিতা-প্রভু, পুত্র-প্রভু ও পবিত্র আত্মা। আর মক্কার মুশরিকরাও মনে করত ফেরেশতারা আল্লাহর কন্যা!
সূরা ইখলাসে মাধ্যমে আল্লাহ ইহুদী, খ্রিষ্টান ও মুশরিকদের এই ভ্রান্ত ধারণা নাকচ করে দিয়েছেন।
সূরা ইখলাসের নামকরণ
সূরা ইখলাসে 'ইখলাস' শব্দটি নেই। পুরো সূরার সারমর্ম থেকেই এই সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
'ইখলাস' অর্থ একনিষ্ঠতা, নিরঙ্কুশতা, একত্ববাদ, আল্লাহর এককত্ব, একনিষ্ঠ ধর্মপালন, আল্লাহর পরিপূর্ণতার ঘোষণা ইত্যাদি। যেহেতু এই সূরায় আল্লাহর একত্ববাদ, নিরঙ্কুশ ক্ষমতা, শ্রেষ্ঠত্ব এবং অমুখাপেক্ষীতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাই সূরাটির নামকরণ করা হয়েছে ইখলাস।
সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই। তিনিই মুক্তিদাতা। তাই তাঁরই কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে এবং তারই কাছে সাহায্য চাইতে হবে।
আমীন