বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অধিশাখা থেকে জারি করা সম্প্রতি একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে:
বাংলাদেশের যেসব কোম্পানি বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে তারা চাইলে এখন বিদেশেও তাদের অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে সাতটি শর্তের উল্লেখ্য করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি ইতোমধ্যেই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। নতুন বিধিমালা অনুসারে, বিনিয়োগে আগ্রহী যেকোনো প্রতিষ্ঠান তাদের আগের পাঁচ বছরের গড় রপ্তানি আয়ের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অথবা তার সর্বশেষ নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে প্রদর্শিত নিট সম্পদের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে।
বিদেশে বিনিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বরাবর করা ব্যাবসায়ীদের আবেদন পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি বিনিয়োগের অনুমতি দিলেই ব্যবসায়ীরা বিদেশে তাদের অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে অনুমতি পাওয়ার পর কোনো কারণে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ না হলে প্রদত্ত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে এই নীতিমালায়। এই নীতিমালার একটি অন্যতম শর্ত হলো ঋণখেলাপিরা বিদেশে বিনিয়োগের এই সুবিধা পাবেনা।
এতদিন কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বিদেশে বিনিয়োগ করলেও এ বিষয়ে কোন সরকারি নীতিমালা ছিলো না। কোন প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটি যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত জানাতো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে প্রথম একটি প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি দেয় সরকার। এরপর বেশ কয়েকটি কোম্পানি বিনিয়োগের অনুমতি পেয়েছে। আরও অনেক কোম্পানি বিদেশে বিনিয়োগের আবেদন করেছে।
বর্তমানে দেশের ১৭টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি আছে।
বিদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি প্রাণ-আরএফএল গ্রূপের ডিরেক্টর উজমা চৌধুরী সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন কোম্পানিগুলো এখন সক্ষমতা অনুযায়ী বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষক গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন
সরকারের এই নীতিমালার ফলে এখন বাংলাদেশি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশে অফিস স্থাপন করে সরাসরি তাদের ব্রান্ডকে প্রমোট করা সহজ হবে।
তবে তিনি মনে করেন সঠিকভাবে মনিটর করা না গেলে অর্থ পাচারের ঝুঁকির তৈরি হতে পারে। উল্লেখ্য, অসাধু কিছু সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাংকার এবং ব্যাবসায়ীদের যোগসাজশে বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়ার অভিযোগ সবসময়ই উঠছে।