পুতিনের বাবা ছিলেন রাশিয়া সেনাবাহিনীর সদস্য ভ্লাদিমির স্পিরিদোনোভিচ পুতিন আর মা মারিয়া লিদমিয়া পুতিন। জন্ম: ৭ অক্টোবর, ১৯৫২, লেনিনগ্রাদে। ছাত্র থাকা অবস্থায়ই অন্য ছেলেদের সঙ্গে মাঝে মধ্যে মারপিটে জড়িয়ে পড়তেন পুতিন। এমনকি স্কুলের সময় থেকেই তাঁর নিজের ‘গ্যাং’ ছিল, যা তিনি নি়জের বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে তৈরি করেছিলেন।
গোয়েন্দা থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং পরে রাষ্ট্রপতি
সেই সময় জুডো-ক্যারাটে খেলোয়াড়দের দিকে নজর রাখছিল রুশ গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি। ছোটবেলা থেকে রাশিয়ার গোয়েন্দা চরিত্র স্টিয়ারলিটজের দ্বারা অনুপ্রাণিত ভ্লাদিমিরের নিজেরও গুপ্তচর সংস্থায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল।
স্টিয়ারলিটজের গল্প দিয়ে তৈরি সিনেমা ‘সেভেনটিন মোমেন্টস্ অব স্প্রিং’ সিনেমাটি ভ্লাদিমিরকে গুপ্তচর সংস্থায় যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করে। এ ছাড়াও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা বিভিন্ন সিনেমাও তাঁকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল গুপ্তচর সংস্থায় যোগ দিতে।
১৯৭৩ সালে ‘সেভেনটিন মোমেন্টস্ অব স্প্রিং’ মুক্তি পাওয়ার সময় ভ্লাদিমিরের বয়স ছিল ২১। এর দুবছর পরই ১৯৭৫ সালে তিনি রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি-তে যোগ দেন।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেখানে কাজ করতেন আজকের রুশ প্রেসিডেন্ট। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তিনি ক্রেমলিনের কর্মী হিসাবে নিযুক্ত হন।
১৯৯৯ সালে পুতিন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে ছিলেন ২০০০ পর্যন্ত। এর পর ২০০০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট এবং ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ তে তিনি আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আছেন এখন পর্যন্ত।
স্ত্রী-র চরিত্র যাচাই করতে পাঠিয়েছিলেন বন্ধুকে!
১৯৮৩ সালে পুতিন বিয়ে করেন মারিয়া লুদমিয়াকে। এর আগে লুদমিয়ার সাথে প্রেম করার সময়ে নিজের কর্মজীবন সম্পর্কে কিছুই জানাননি ভ্লাদিমির। কেজিবি-র বিষয়ে লুকিয়ে গিয়ে বলেছিলেন, তিনি পুলিশে কাজ করেন। এমনকি লুদমিলা-র চরিত্রও পরখ করে দেখেন তিনি।
গুপ্তচরদের সন্দেহের তালিকায় থাকেন সকলেই। নিজের সঙ্গী বা সঙ্গিনীকেও বিশ্বাস করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এমনটাই ঘটিয়েছিল পুতিনও। তিনি পরিক্ষা করেন লুদমিয়াকে। তাঁর সেই পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হন লুদমিলা পুতিন।
প্রেমিকার চরিত্র যাচাই করতে লুদমিলা-র কাছে নিজের এক বন্ধুকে পাঠিয়েছিলেন ভ্লাদিমির। নিজেকে বড়লোক বলে জাহির করা ওই বন্ধু ভ্লাদিমিরের কথায় লুদমিলাকে প্রেমের প্রস্তাবও দেন। তবে লুদমিলা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁর এক জন ‘পুলিশ’ প্রেমিক আছে এবং তিনি তাঁকেই বিয়ে করতে চান।
এর পরই আর দেরি করেননি পুতিন। বুঝে গিয়েছিলেন, লুদমিলাই সঠিক জীবনসঙ্গী। ১৯৮৩ সালে বিয়ে করে নিজেদের দাম্পত্য জীবন শুরু করেন ভ্লাদিমির- লুদমিলা।