বাংলা বার্তা কমিউনিটি নেটওয়ার্ক. . . ব্রিটিশ বাংলাদেশী প্রবাসীদের প্রাণের উচ্ছ্বাস আর আবেগ ও অনুভূতির আরেক নাম BBCNUK

ডায়াবেটিস মেলিটাস টাইপ-২ (Diabetes mellitus type 2) কি, কেন হয় এবং প্রতিরোধের উপায়

ডায়াবেটিস মেলিটাস টাইপ-২ (Diabetes mellitus type 2) কি, কেন হয় এবং প্রতিরোধের উপায়
bbcnuk

আমাদের শরীরের শক্তির মূল উৎস হচ্ছে চিনি বা গ্লুকোজ। শরীর বিশেষ প্রক্রিয়ায়  চিনিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করে।

Pathophysiology of Diabetes Mellitus Type 2:
Pathophysiology of Diabetes Mellitus Type 2:

 
ডায়াবেটিস টাইপ ২ হলো শরীর যে প্রক্রিয়ায় চিনি বা গ্লুকোজকে জ্বালানি হিসাবে ব্যাবহার করে তার প্রতিবদ্ধকতা। 

টাইপ ২ ডায়াবেটিস দীর্ঘস্থায়ী হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়, ইনসুলিনের ঘাটতি বা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং ইমিউন সিস্টেমের ব্যাঘাত ঘটায়। এছাড়া ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে অতিরিক্ত শর্করার উপস্থিতি অনেক দীর্ঘস্থায়ী জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে যেমন, হৃৎপিণ্ডের রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি যা অন্ধত্ব ঘটাতে পারে, কিডনি বিকলতা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত প্রবাহের স্বল্পতা যা অঙ্গহানির কারণ হতে পারে। সহসা রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পেয়ে হাইপার অসমোলার হাইপারগ্লাইসেমিক স্টেট নামক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তবে ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস হওয়ার সম্ভাবনা কম।


টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শরীরের মোট ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যায়, ফলে শর্করার সাম্যাবস্থা নষ্ট হয়। রক্তের শর্করার মাত্রা নির্ণায়ক বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিস তথা কোন ধরনের ডায়াবেটিস হয়েছে তা নির্ণয় করা হয়।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ

প্রাথমিকভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ হল স্বাস্থ্য অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া ও শারিরীক পরিশ্রম কম করা।কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে বংশ পরষ্পরায় এই রোগ হতে পারে। মোট ডায়াবেটিস রোগীর প্রায় নব্বই শতাংশই টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। বাকি দশ শতাংশ প্রাথমিকভাবে টাইপ-১ ডায়াবেটিস ও জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত।

টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রাথমিকভাবে দুটি সমস্যা হলো পাকস্থলীতে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে না। (ইনসুলিন) একটি হরমোন যা দেহের কোষে চিনির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে - এবং কোষগুলি ইনসুলিনের প্রতি ভালোভাবে সাড়া দেয়না এবং কম চিনি গ্রহণ করে। 

টাইপ ২ ডায়াবেটিস সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়াবেটিস হিসাবে পরিচিত, তবে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস শৈশব এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয় অবস্থায় শুরু হতে পারে। টাইপ ২ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে স্থূলতায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অল্প বয়স্কদের মধ্যে টাইপ ২ ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

মূলত এই রোগের তেমন কোন চিকিৎসা নেই। তবে ওজন কমানো, পরিমিত খাওয়া এবং শারীরিক ব্যায়াম আপনাকে এই রোগ নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে। যদি খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং শারীরিক ব্যায়াম আপনার রক্তে শর্করা ব্যবস্থাপনার জন্য যথেষ্ট না হয়, তাহলে চিনিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে শক্তিতে রুপান্তরের জন্য ডায়াবেটিসের ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।

টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে অত্যধিক তৃষ্ণা (পলিডিপসিয়া), ঘনঘন প্রস্রাব (পলিইউরিয়া) ও ওজন হ্রাস। এছাড়া ক্ষুধাবৃদ্ধি, মিষ্টি খাবারের প্রতি অত্যধিক আসক্তি , ঝাপসা দেখা, চুলকানি, প্রান্তীয় স্নায়ুরোগ, পুনঃপুন যোনিতে সংক্রমণ, ওক্লান্তি অনুভব ও ক্ষত নিরাময়ে বিলম্ব হওয়াও এর লক্ষণ। এই উপসর্গগুলো ধীরেধীরে প্রকাশ পায়। অনেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রথম কয়েক বছর কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না কেবল নিয়মমাফিক পরীক্ষার সময় রোগ ধরা পড়ে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রভাব 

টাইপ-২ ডায়াবেটিস দীর্ঘস্থায়ী হলে আয়ুষ্কাল প্রায় দশ বছর কমে যেতে পারে। ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ বা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা দুই থেকে চার গুণ বেড়ে যায়। বাহু এবং পায়ের রক্ত প্রবাহ কমে প্যারালাইজড হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ২০ গুণ। এছাড়া ডায়াবেটিস অন্ধত্ব, কিডনি বিকলতা, চিন্তাশক্তি  বিলোপ, স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ায় অন্যান্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে চর্মরোগ, যৌন দুর্বলতা ও ঘনঘন সংক্রমন।

প্রতিরোধ ও প্রতিকার

লাইফস্টাইল বা দৈনন্দিন জীবনযাপন রীতির পরিবর্তনের পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যেতে পারে।বেশী মাত্রার শারীরিক কসরত  ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২৮ শতাংশ কমাতে সক্ষম। তবে কায়িক শ্রম না দিয়ে শুধু খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর সম্ভাবনা খুব কম। 

তেল এবং চর্বিযুক্ত মাংসের পরিবর্তে  সবুজ শাক-সবজি এবং মিষ্টিহীন ফল বেশি করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। সরাসরি চিনি একেবারেই পরিহার করা, চিনিযুক্ত এবং শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায় এছাড়া ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে ঝুঁকি কিছুটা কমানো সম্ভব। 

#


BBCN থেকে আরো পড়ুনঃ



Getting Info...

إرسال تعليق

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.