বাংলা বার্তা কমিউনিটি নেটওয়ার্ক. . . ব্রিটিশ বাংলাদেশী প্রবাসীদের প্রাণের উচ্ছ্বাস আর আবেগ ও অনুভূতির আরেক নাম BBCNUK

ওটস ডায়াবেটিস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে

ওটস ডায়াবেটিস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। ওটস নিম্ন-গ্লাইসমিক খাদ্য। এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ওটসে বিটা-গ্লুকান নামের দ্রবণ
bbcnuk

ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা সাম্প্রতিক সময়ের একটি গুরুতর সমস্যা। সুসম খাদ্য আর নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমেই একমাত্র এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

Oats control diabetes and weight
Oats

এক্ষেত্রে ওটসের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
ওট হচ্ছে গমের মত একটি খাদ্যশস্য যার পুষ্টিগুণ গমের চেয়ে কিছুটা আলাদা। আধা কাপ (৭৮ গ্রাম) ওটসে আছে ১৯১ শতাংশ ম্যাংগানিজ, ৪১ শতাংশ ফসফরাস, ৩৪ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম, ২৪ শতাংশ কপার, ২০ শতাংশ আয়রন, ২০ শতাংশ জিঙ্ক, ১১ শতাংশ ফোলেট, ৩৯ শতাংশ ভিটামিন বি১ (থায়ামিন), ১০ শতাংশ ভিটামিন বি৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড) যা একজন মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পুরণ করে।ওটসে থাকা  গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের পক্ষে খবুই উপকারী। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুবই ভালো খাবার। 

ওটস ডায়াবেটিস রোগীর কি উপকার করে


ওটস নিম্ন-গ্লাইসমিক খাদ্য। এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ওটসে বিটা-গ্লুকান নামের দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে যা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্থিতিশীল করে ডায়াবেটিস পরিচালনা করতে সহায়তা করে।

এর মধ্যে থাকা ফাইবার দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে এবং অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে।


ওটস মূলত কার্বোহাইড্রেটের উৎস যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে চিনিতে রূপান্তরিত হয়। ওটসের কার্বোহাইড্রেটে যে ফাইবার রয়েছে, তা রক্তের প্রবাহে চিনির ধীর মুক্তি ঘটায়। ফলে রক্তে সুগার তথা ডায়াবেটিসের মাত্রা কম থাকে। জটিল কার্বোহাইড্রেট সহ, ওটসে অল্প পরিমাণে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে।


ওটস কিভাবে ওজন কমায়


ওটস কম স্টার্চযুক্ত এবং ডাইইউরেটিক। অর্থাৎ এটি শরীরের অতিরিক্ত পানি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ওটস ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে এবং অত্যধিক খাবার গ্রহণে অনুৎসাহিত করে।

প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ইনসুলিন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে স্থুলতা কমায়। এতে ক্যালোরি কম থাকায় ওজন হ্রাসে সাহায্য করে।


ওটস কখন খাবেন 


ওটস নির্দিষ্ট কোন এক বেলায় খেতে হবে এমন কোন কথা নেই।  সকালের নাস্তা, দুপুরের বা রাতের খাবার হিসাবে ওটমিল খাওয়া যায়। তবে সকালের নাস্তায় ওটমিল সবচেয়ে উত্তম। 
ওটসে আছে বিটা গ্লুক্যান
যা খুবই শক্তিশালী ফাইবার। এর রয়েছে অনেক গুণ। এটি রক্তের খারাপ কোলেস্টরেল এবং চিনির মাত্রা হ্রাস করে। এর জন্যই ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের নাশতা হিসেবে ওট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সঠিক পরিপাক ক্রিয়ার জন্য পরিপাকতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। তাই ওট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্যান্য পেটের সমস্যায় বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। মূলত, বিটা গ্লুক্যানের জন্য ওট খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা মনে হয়। বিটা গ্লুক্যান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ওটসে থাকে এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, নাম ট্রিপটোফান। এর প্রভাব স্নায়ুর উপরে পড়ে। তাতে হাল্কা আচ্ছন্ন ভাব আসে শরীরে। তাই পেট ভরে ওটস খেয়ে বিশ্রাম নিলে বেশ তাড়াতাড়ি ঘুম এসে যায়।

সাইকোলজি টুডে’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই খাবারের প্রভাবে শরীরে ইনসুলিনও তৈরি হয়। সেই ইনসুলিনের প্রভাবে আবার ট্রিপটোফ্যান পৌঁছয় মস্তিষ্কে। সেখানে গিয়ে তার থেকে সেরোটনিন তৈরি হয়। সেরোটনিন হল সেই পদার্থ যার মাধ্যমে ঘুম, মনের ভাব, ব্যথা-বেদনার অনুভূতি নিয়ন্ত্রিত হয়।

সেরোটনিন শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হলে উদ্বেগ-অবসাদ কম থাকে। আর ঘুম ভাল আসে। ফলে রাতের দিকে ওটস খেলে নিশ্চিন্ত নিদ্রা লাভ করা যেতে পারে। 

ওট যেভাবে খাবেন

ওটস খাওয়ার সবচেয়ে বেশি প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে দুধের সঙ্গে নানা রকমের তাজা ও শুকনো ফল আর মধু মিশিয়ে খাওয়া। এ ছাড়া আরও হাজার রকম উপায়ে এটি খাওয়া যায়। ওট দিয়ে বানানো যায় স্বাস্থ্যসম্মত কেক, বিস্কুট, রুটি, স্মুথি, স্যুপ, ফ্রাইড রাইস, খিচুড়িসহ আরও অনেক কিছু। ওজন কমাতে চাইলে সকালবেলা এক বাটি ওট লো ফ্যাট বা টক দইয়ের সঙ্গে মধু এবং কয়েক ধরনের ফল মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

ডায়াবেটিস এবং ওজন কমানো ছাড়াও ওটসের অন্য উপকারীতাও আছে। 

ওট অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধঃ 

হোল ওট পলিফেনল, ফেরুলিক, অ্যাভেন্যানথ্রামাইড নামের উচ্চমানের অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর। অ্যাভেন্যানথ্রামাইড শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বাড়িয়ে রক্তচাপের মাত্রা কমিয়ে থাকে। একই সঙ্গে এটি একটি ভালো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ইচিং উপাদান।


ব্রেস্ট ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করেঃ 

ওটের বিদ্যমান অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট ব্রেস্ট ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব নারী প্রতিদিন এক বাটি ওট খান, তাঁদের ভেতর ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি ৪১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। আর এটি পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। এসব অঙ্গ সুস্থ থাকলে কোলন ক্যানসার হওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকে না। 

উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ
ওটস খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়না।

মানসিক সুস্থতায় উপকারীঃ
ওটস খেলে মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেরোটোনিন ঘুম ও রাগ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দুশ্চিন্তা দূর করে মন ভালো রাখতেও বেশ সহায়ক। 


হার্টওটসে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এই উপাদানটি জারণকে (oxidation) বাধা দেয়। যা হৃদযন্ত্রকে রক্ষা করে।

ত্বক: ওটস ত্বকের জন্য খুব উপকারী। কারণ ওটসের অনেকগুলি পুষ্টিকর এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বককে নরম এবং সুন্দর করে তোলে।

স্ট্রেস: অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণে মস্তিষ্কে স্ট্রেস বাড়ে। স্ট্রেস উপশম করতে নিয়মিত আপনার ডায়েটে ওটস খাবেন।

অন্ত্রের উপকার: ওটসে ফাইবার বেশি থাকে। যা অন্ত্র এবং মলদ্বার জন্য খুব উপকারী। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের আরও বেশি ওটস খাওয়া উচিত। গ্রহণ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হ্রাস করে। 
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে: টানা ২ মাস ওটস খাওয়ার ফলে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ হ্রাস পায়। এটি খারাপ কোলেস্টেরলকে থাকতে দেয় না এবং ভাল কোলেস্টেরলকে সুরক্ষা করে। 

--------


BBCN থেকে আরো পড়ুনঃ

Getting Info...

إرسال تعليق

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.