বাংলা বার্তা কমিউনিটি নেটওয়ার্ক. . . ব্রিটিশ বাংলাদেশী প্রবাসীদের প্রাণের উচ্ছ্বাস আর আবেগ ও অনুভূতির আরেক নাম BBCNUK

মহিলাদের ওজন কমানোর শীর্ষ টিপস

দ্রুত ওজন কমানোর উপায়, মহিলাদের ওজন কমানোর শীর্ষ টিপস, মহিলাদের ওজন কমানোর উপায়, কিভাবে ওজন কমাবেন, ওজন কমাতে হলে কি করবেন, ওজন কমান সুস্থ থাকুন
bbcnuk

শরীরের অতিরিক্ত ওজন একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি খুবই জটিল সমস্যা। বাড়তি ওজন মেয়েদের শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট করে। এছাড়া বাড়তি ওজন, বাড়তি রোগ ডেকে আনে।

ওজন কমানোর উপায়
ওজন কমানোর উপায়


যাঁরা ফ্যাশন সচেতন, ওজন কমাতে তাঁরা বিস্তর খাটাখাটনি করেন। স্বাস্থ্য কমিয়ে স্লিম ফিগার রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু  যাঁরা ফ্যাশন সচেতন নন, কে কি বলল এটা নিয়ে যাঁদের মোটেও মাথাব্যথা নেই, তাদেরও ওজন কমানো দরকার। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরী। 


ডায়েট এবং ব্যায়াম মহিলাদের ওজন কমানোর মূল উপায় হতে পারে, তবে অন্যান্য আরো অনেক উপায় আছে যেগুলো ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রকৃতপক্ষে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে ঘুমের গুণগত মান থেকে স্ট্রেস লেভেল- ক্ষুধা, মেটাবোলিজম (শরীরের কোষে রাসায়নিক বিক্রিয়া যা খাদ্যকে শক্তিতে পরিবর্তন করে), শরীরের ওজন এবং পেটের চর্বিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

দৈনন্দিন রুটিনে কয়েকটি ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে সহজেই শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। 

হেলথলাইন ওয়েবসাইটে পুষ্টিবিদ রেসেল লিংক মহিলাদের ওজন কমানোর ২৩ টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিয়েছেন। তা থেকে কিছু এখানে তুলে ধরা হয়েছে। 

১। পরিশোধিত (কার্বোহাইড্রেট) শর্করাযুক্ত খাবার কমানো

সাদা রুটি, পাস্তা, ভাত এবং প্যাকেটজাত খাবারে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়, ক্ষুধা বাড়ায় এবং শরীরের ওজন এবং পেটের চর্বি বৃদ্ধি করে। এগুলোর পরিবর্তে ওটস, বাদামী চালের ভাত এবং বার্লির মতো পুরো শস্যজাত খাদ্য খেতে হবে।
ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার যেমন 'ওটস' ধীরে ধীরে হজম হয়, এতে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। এছাড়া বাদামের মাখনের সাথে ফল, ব্লেন্ড করা ছোলার সাথে সবজি বা বাদামের সাথে গ্রীক দই হল পুষ্টিকর খাবারের উদাহরণ যা দীর্ঘস্থায়ী ওজন কমাতে সহায়তা করে।

২। বেশী পানি পান করা

একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৫০০মিলি লিটার পানি পান করার ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর ক্যালরি বার্ন করা ৩০% বেড়ে যায়। এছাড়া খাবারের আগে পানি পান করলে ১৩% ক্যালরি কমে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। 

৩। প্রোটিনজাতীয় খাবার বেশী খাওয়া 

১২ সপ্তাহের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ মাত্র ১৫% বৃদ্ধির ফলে দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ৪৪১ ক্যালোরি কমে যায় - যার ফলে ৫ কেজি ওজন হ্রাস পায়।

মাংস, হাঁস-মুরগি, সামুদ্রিক খাবার (মাছ), ডিম, দুগ্ধজাত খাবার এবং লেগুমের মতো প্রোটিন খাবার স্বাস্থ্যকর খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। (তবে লাল মাংস পরিহার করা উচিৎ)। 

৪। ছোট প্লেটে খাওয়া অভ্যাস করা

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে  যারা খাওয়ার সময় ছোট প্লেট ব্যবহার করেছেন তারা বড় প্লেট ব্যাবহারকারীদের চেয়ে কম খেয়েছেন এবং তুলনামূলক বেশি সন্তুষ্ট বোধ করেছেন। পরিমাণে কম খাওয়া ওজন কমানোর অন্যতম উপায়।

৫। প্রক্রিয়াজাত খাবার সীমিত করা

প্রক্রিয়াজাত খাবারে সাধারণত ক্যালোরি, চিনি এবং সোডিয়াম বেশি থাকে যা ওজন বাড়াতে সহায়ক। প্রক্রিয়াজাত খাবার মানে রেডিমেড ফুড যা কৌটা বা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। এসব খাবার যথাসম্ভব পরিহার করা উচিৎ। 

৬। চিনি দিয়ে তৈরি খাবার না খাওয়া 

অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবারে অতিরিক্ত ক্যালোরি থাকে কিন্তু ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং প্রোটিনের অভাব থাকে। তাই
আলাদা চিনি মিশিয়ে যেসব খাবার বানানো হয় তা না খাওয়া ওজন কমানোর জন্য অপরিহার্য। 

দক্ষিণ এশিয়া তথা বাংলাদেশের জিলাপি, রসগোল্লা, মিষ্টি দই ইত্যাদি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়া সোডা, ক্যান্ডি, প্যাকেটজাত ফলের রস, স্পোর্টস ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, ফিজি ড্রিংকস এসব পরিহার করা উচিৎ। 

এগুলো শুধু ওজন বাড়ায়না, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগও ডেকে আনে। 

৭। একটি খাদ্য তালিকা প্রণয়ন করা বা একটি ফুড জার্নাল ব্যাবহার করা


কোনদিন কোন বেলায় কি খাবেন তার একটি তালিকা প্রণয়ন করুন। এটা আপনাকে সুষম ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণে সাহায্য করবে।
14-Day Clean-Eating Meal Plan

14-Day Clean-Eating Meal Plan


এছাড়া 
আপনি যা খাচ্ছেন তা ট্র্যাক করতে একটি খাদ্য জার্নাল ব্যবহার করতে পারেন যা নিজেকে জবাবদিহি করার এবং স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করার একটি সহজ উপায়।

৮। মনোযোগ সহকারে ধীর গতিতে এবং বেশি চিবিয়ে খাওয়া 

মনোযোগ সহকারে খাওয়ার মধ্যে রয়েছে আপনার খাবারের সময় বাহ্যিক বিভ্রান্তি কমিয়ে আনা। ধীরে ধীরে খাওয়ার চেষ্টা করা এবং আপনার খাবারের স্বাদ, চেহারা, গন্ধ এবং অনুভূতি কেমন তার উপর আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। ধীর গতিতে খাওয়া আপনার  অনুভূতিতে পূর্ণতা আনতে পারে এবং দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করতে পারে। খাবার বেশি চিবিয়ে খেলে পরিমাণে কম লাগে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি কামড়ে বা প্রতি লোকমায় ১৫ বারের জায়গায় ৫০ বার চিবানোর ফলে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্যালোরির পরিমাণ কমে যায়। 

৯। উপবাস বা রোজা রাখার অভ্যাস করা 

মাঝে মাঝে একটানা ১৪-১৫ ঘন্টা না খেয়ে থাকা বা উপবাস করা ক্যালরি কমানোর জন্য খুবই কার্যকর। 

মুসলিমদের একমাস একটানা রোজা রাখা এক্ষেত্রে একটি উতকৃষ্ট উদাহরণ। তবে ইফতারের পর অনেক বেশি খেয়ে ফেললে বা মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার খেয়ে ফেললে ক্যালরি কমানোর ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়না।

১০। নিয়মিত ঘুমের একটি তালিকা তৈরী করা 

পর্যাপ্ত ঘুম ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মহিলাদের মধ্যে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতি রাতে কমপক্ষে সাত ঘন্টা ঘুমানো এবং সামগ্রিক ঘুমের গুণগত মান উন্নত করা ওজন কমানোর সম্ভাবনা ৩৩% বৃদ্ধি করে। (তবে দিনের বেলায় ঘুমানো উচিৎ নয়)। 

১১। দৈনন্দিন রুটিনে রেসিস্টেন্স ট্রেইনিং যুক্ত করা 

রেসিস্টেন্স ট্রেইনিং পেশী তৈরি করে এবং সহনশীলতা বাড়ায়।এটি ৫০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের জন্য বিশেষ উপকারী, কারণ এটি আপনার শরীরে বিশ্রামে পোড়া ক্যালোরির সংখ্যা বাড়ায়। ওজন উত্তোলন, জিমের সরঞ্জাম ব্যবহার করা, বা শরীরের ওজন ব্যায়াম করা শুরু করার কয়েকটি সহজ উপায়।


১২। কার্ডিও ব্যায়াম  

অ্যারোবিক ব্যায়াম, যা কার্ডিও নামেও পরিচিত।প্রতিদিন কমপক্ষে ২০-৪০ মিনিট কার্ডিও ব্যায়াম
অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। 

১৩। যোগ ব্যায়াম 


যোগব্যায়াম অনুশীলন চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে যা ওজন বৃদ্ধি রোধ করে শরীরের ফিটনেস বাড়ায়।

১৪। হাঁটার পরিমাণ বাড়ানো 

ওজন কমানোর জন্য হাঁটার অভ্যাস বাড়াতে হবে। কম দূরত্বের পথ হেঁটে চলা, লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে যাওয়া, দরজা থেকে আরও দূরে গাড়ি পার্ক করা, বা আপনার মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির সময় হাঁটাহাঁটি করা হল কয়েকটি সহজ কৌশল যা আপনার মোট পদক্ষেপের সংখ্যা বাড়াতে এবং আরও ক্যালোরি পোড়াতে পারে।

১৫। মানসিক চাপ কমানো 

অতিরিক্ত মানসিক চাপ স্বাস্থ্য কমাতেও পারে বাডাতেও পারে। মানসিক অস্থিরতা খাদ্য গ্রহণ ও অন্যান্য নিয়মানুবর্তিতায় ব্যাঘাত ঘটায় এতে ওজন বেশি কমে যাওয়া বা বেশি বেড়ে যাওয়া দুটোই হতে পারে।

১৬। প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট নেয়া

প্রোবায়োটিক হল এক ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা খাদ্যকে দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে। তবে এটি ব্যাবহারে আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।

সর্বোপরি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ
ওজন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা। যেমন তিন মাসে ১০ পাউন্ড কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে উপোরোক্ত নিয়মাবলি অনুসরণ করুণ। মেপে দেখুন কত ওজন কমলো। আবার তিন মাস একই প্রাক্টিস করুন। এভাবে করলে একসময় আপনার লক্ষ্য পূরণ সম্ভব এবং ফিট থাকতে পারবেন। 

উপরোক্ত টিপস শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য তা কিন্তু নয়। পুরুষরাও একই রকম নিয়ম অনুসরণ করে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সক্ষম। 
--------


BBCN থেকে আরো পড়ুনঃ



Getting Info...

إرسال تعليق

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.